|| বুক রিভিউ: “উপমার শৈল্পিকতায় মুগ্ধময় কুর’আন” ||
"সারি সারি বইয়ে আমরা সজ্জিত করে রাখি শেলফের প্রতিটি তাক। ওগুলো পড়ে বিশ্লেষণ করি। বিচিত্র শৈল্পিক কারুকাজে নিজেকে খুঁজে ফিরি। কোনো কবির সাহিত্যের মান নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হই, আবার কারোর উপস্থাপনে যারপরনাই অসন্তুষ্ট।
কিন্তু সব সাহিত্যকলার ঊর্ধ্বে যেই ঐশীগ্রন্থ, তার নিখুঁত শৈল্পিকতা সম্পর্কে আমরা ক’জন-ই বা জানি?
নিঃসন্দেহে আল-কুরআন এক সুনিপুণ-প্রজ্ঞাময় জীবনব্যবস্থার উৎস। যুগে-যুগে কুর’আনের মুজিযা প্রমাণিত হয়েছে বারংবার। কিন্তু এর বাইরে কুর’আনের অন্য বিশেষণের কথা আমাদের অনেকেরই অজানা।
কুর’আনের চমৎকার সাহিত্যশৈলীও তার অলৌকিকত্বের উল্লেখযোগ্য অংশ।
এই অজানা উপলব্ধির কারণে আজ কুর’আনকে আমরা মনে করি নীরস-নির্জীব। কুর’আনের গভীরতা অন্তরে অনুভব করতে পারি না বলে কুর’আন পড়ে মজা পাই না।
বাংলা ভাষায় কুর’আনের সাহিত্যশৈলীকে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরার কার্যক্রম নেই বললেই চলে। অথচ এই বিষয়ে বড় পরিসরে জানা কুর’আন মূল্যায়নের চৌম্বকীয় অংশের মধ্যে পড়ে।
এজন্যই উক্ত বিষয়লব্ধ জ্ঞান আহরণে আমরা অনেকাংশেই বিদেশী আলেম-স্কলারদের উপর নির্ভরশীল।
উস্তাদ নোমান আলী খান, যিনি স্বপ্ন দেখেন কুরআন দিয়ে বিশ্বজয়ের তারই বয়ানে উঠে আসে আলোচ্য বিষয়টি। তারই লেকচার অনুসারে মলাটবদ্ধ হয়েছে “উপমার শৈল্পিকতায় মুগ্ধময় কুর’আন”
উস্তাদের পরিচয় নিয়ে ভূমিকার কিছুই নেই। পশ্চিমের সবচেয়ে প্রভাবশালী স্কলারদের মধ্যে যে নামটা উঠে আসে, তিনিই উস্তাদ নোমান আলী খান।
|বইয়ের কথাঃ|
কুর’আনের আলংকারিক সৌন্দর্য প্রস্ফুটিত হয়েছে এই বইয়ের ভাঁজে ভাঁজে। উস্তাদের ১০টি লেকচারে মলাটবদ্ধ হয়েছে এই বইটি, যার প্রত্যেকটি আপনার অন্তরকে ক্রমেই মোহাবিষ্ট করে তুলবে। কুর’আনের প্রত্যেকটা আয়াত নিয়ে নতুন করে ভাবতে ইচ্ছে করবে, উপমার শৈল্পিকতায় হিদায়াহ খুঁজতে ইচ্ছে করবে।
কুর’আনের শব্দচয়ন কতটা সৃজনশীল, ভাষা কতটা মনোমুগ্ধকর এবং অর্থ কতটা যৌক্তিক হতে পারে তা’ই উস্তাদ নোমান আলী খানের চিন্তাভাবনা ও আলোচনার বিষয়।
কুর’আন নাযিলের পর তৎকালীন বিশ্বব্যাপী বিস্তারকারী আরব-সাহিত্য হয়ে যায় বিস্মৃত। কাফির-মুশরিকরা চ্যালেঞ্জ করতে এসে বিমূঢ় হয়ে যেতো। দিনরাত চিন্তা করে করে কুর’আনের শৈলীতে একটা হরফও লিখতে পারতো না। অথচ তখনকার সময়ে আরব-০সাহিত্য আর কবিদের টেক্কা দেওয়ার মতো কেউই ছিলো না। তারা বলতো, এতো কোনো মানুষের সৃষ্টিকর্ম হতে পারে না!
এতো সুন্দর ভাষাশৈলী, এতো গভীর ভাবার্থ আর উপমার ঐশী অলংকরণে এই গ্রন্থ মানুষের মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতার বাইরে।
যিনি এই কুর’আনের মালিক তিনি এমনসব উপমায় এই গ্রন্থের কথাগুলো উপস্থাপন করেছেন, যেন কেউ একবার আঁচ পেলেই এর ভেতরকার মণিমুক্তার চাকচিক্য আন্দাজ করতে পারে। প্রথম পাঠেই যেন মন থেকে ভালোবেসে ফেলে। আর ভালোবাসার জিনিসগুলোকে তো মনুষ্যকূল শর্তহীনভাবে মেনে নেয়।
যে সত্তা ভাষা সৃষ্টি করেছেন, তার ভাষা সাহিত্য কতটা অন্তর্ভেদী, তা জানাটা আমাদের কুর’আনের প্রতি ভালোবাসার তীব্রতা জাগাতে অনন্য ভূমিকা রাখে। উপমা-রূপকে অলংকৃত কুর’আনের অভ্রভেদী বয়ানে হিদায়াহ’র সরলীকরণ বর্ণিত হয়েছে বইটিতে। এসব শৈল্পিকতায় মুমিনরা পায় সফেদ সত্যের প্রভাতী কিরণ, আর উপমার কালো হরফের তেজদীপ্ত ভাস্মরে অবিশ্বাসের দেয়ালে গেঁথে দেয় বিশ্বাসের কথামালা।
|বইয়ের ইতিবাচক/নেতিবাচক দিকঃ|
কোনো নেতিবাচকতা চোখে পড়েনি। বইয়ের বাইন্ডিং, পৃষ্ঠা কোয়ালিটি সবকিছুই উন্নতমানের, প্রচ্ছদ নিয়েও কোনো অভিযোগ নেই; ভালো লেগেছে।
|পাঠ্যানুভূতিঃ|
অসাধারণ একটা বই। ভাবনাগুলোকে ৩৬০° এংগেলে ঘুরিয়ে দিয়েছে। কুর’আনের মুগ্ধময় শৈলীতে রবের সাথের গভীর কথোপকথনের সাধ জেগেছে। কতই না সুন্দর আমার রবের বাণী!
ভাষাশিল্পের উপভোগ্যতায় সত্য আর শুভ্রতা অন্বেষণ করতে আপনিও কিনে ফেলুন বইটা। কুর’আন সম্পর্কে জানুন, বুঝুন। রবের অনবদ্য রচনার প্রশংসায় ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে উঠুন আরও একটিবার।
রিভিউ লেখিকা: মাহিরা তাসনিম [ওয়াফিলাইফ থেকে নেওয়া]
যেখানে পাবেন:
#রকমারি: (16297 / 01519521971)
https://tinyurl.com/ROKOMARIBOOKISH
#ওয়াফিলাইফ (01799-925050)
https://tinyurl.com/wafibookish
বাংলাবাজারে পাবেন সমকালীন প্রকাশন, মাকতাবাতুন নূর, কলরব ও মিরাজ প্রকাশনীতে।
যেকোনো তথ্যের জন্য : Bookish Publisher (+8801645261821)
অনলাইন শপ ও অন্যান্য প্রাপ্তিস্থান:
https://tinyurl.com/foundplaces

লেখক: 
