অনান্য

বলুন, হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমরা সবাইও এখন মোটামুটি শঙ্কিত একটা সময় কাটাচ্ছি। একমাত্র সুদৃঢ় কঠিন ঈমানদার ব্যক্তি (যে মনে করে কোন গুনাহ করেনি) আর অবিশ্বাসী ছাড়া বিশ্বাসীরা অবশ্যই মৃত্যুকে ভয় করে। কেউ যদি বলেন, "আমি অনেক ভালো ঈমানদার, আমি মৃত্যুকে ভয় করি না, মৃত্যু চিন্তা করি না" তবে এটা ওদের ব্যাপার।

আমার যতটা মনে হয় আমরা সাধারণ মানুষ প্রতি মূহুর্তে স্বেচ্ছায়, অনিচ্ছায় অনেক অনেক গুনাহ করে ফেলি। সেগুলো হয়তো কবীরা গুনাহ না, সগীরা গুনাহ। আমাদের কাছে হয়তো সেগুলো ভুলে যাওয়ার মতো গুনাহ। কিন্তু আমরা তো এতোটা শিওর না যে আমাদের সেই গুনাহগুলো মাফ হয়ে গেছে! আমরা তো এতোটা শিওর না যে আমাদের গুনাহ গুলো বিন্দু বিন্দু থেকে সিন্ধু হয়ে যায়নি? আমরা কি জানি আমাদের ভুলে করা গুনাহের কারণে আমাদের নেক আমল গুলি কেড়ে নেয়া হবে না? আমরা পরিপূর্ণ শুদ্ধ আছি?

না আমরা এগুলো কিছুই জানি না।

আমরা নিশ্চয়ই আমাদের রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বেশি ঈমানদার হয়ে যাইনি? যিনি প্রতি সময় মৃত্যুর কথা স্মরণ করতেন। মাঝে মাঝে মৃত্যু পরবর্তী জীবনের কথা ভেবে ব্যাকুল হয়ে যেতেন, কাঁদতেন! আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করার জন্য হলেও রাতের বেলা তাহাজ্জুদে দাঁড়িয়ে পা ফুলিয়ে ফেলতেন! যেখানে উনার আগে পরের সব গুনাহ- ই মাফ করে দেয়া হয়েছিল!

তাহলে আমরা কি রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে বেশি ঈমানদার যে আমাদের মৃত্যু চিন্তা হবে না? আল্লাহ্ মাফ করুন।

রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত হয়ে ও প্রতিদিন প্রায় সত্তর বার আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার কাছে মাফ চাইতেন। কখনও একশো বার ও ইস্তেগফার করতেন। আর আমরা কত জালিম! কত নগন্য! কত বেশি গুনাহগার!

আমাদের মৃত্যু যেকোন সময়-ই হতে পারে। আমরা কেউ-ই মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে পারবো না ; কিন্তু আন্তরিক চেষ্টা করলে বাঁচতে পারবো আখিরাতের শাস্তি থেকে। তাই শুধু মৃত্যু চিন্তা করে, মৃত্যুর জন্য ভীত না হয়ে তার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

না কোন ভয় দেখাতে এই লেখা নয়, বরং আর-রহীম, আর-রহমান আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার দয়ার দিকে, ক্ষমার দিকে ফিরে আসার আহবান জানিয়ে এই লেখা।

এই কঠিন বিপদে, মৃত্যু যেখানে আমাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে ; আমাদের সবার এখন একমাত্র কাজ আন্তরিক ভাবে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার কাছে ক্ষমা চাওয়া, ফিরে আসা আল্লাহর দিকে।

দেখুন সূরা আয-যুমারে দয়ালু আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা কি বলেছেন,

"বলুন, হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ্ সমস্ত গুনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।" [সূরা আয- যুমার:৫৩]

হে ভাই, হে বোন আমার ! যারা মনে করছেন অনেক গুনাহ করে ফেলেছেন, কিভাবে মাফ চাইবেন ! কিভাবে ফিরে আসবেন! সত্যি বলছি এ নিয়ে আপনাকে এক সেকেন্ড ও ভাবতে হবে না। উনি যে আর-রহীম, আর-রহমান! আল-গফুর, আল-গফফার!

উনি মানুষের মতো কঠিন, পাষাণ না। উনি আমাদের জন্য আমাদের প্রিয় মায়ের চেয়ে ও বেশি মমতাবান। উনার কাছে ফিরে আসার জন্য অনেক অনেক জবাবদিহিতা নয়, গোপনে উনার সিজদায় ঝরে পড়া আপনার এক ফোঁটা অনুশোচনার অশ্রুই যথেষ্ট হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ্। বিশ্বাস করুন উনার রাগ উনার দয়া, উনার ক্ষমা কাছে হেরে যাবে।

“কিন্তু যারা তওবা করে ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গুনাহসমূহকে পূন্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দেবেন। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”। [সূরা আল- ফুরক্বান :৭০]

দেখুন আর-রহমানের দয়া! আল-গফফারের ক্ষমা! কি বলেছেন এই আয়াতে! আপনি যদি অনেক গুনাহ করেন তবে তিনি আপনার গুনাহ শুধু ক্ষমা-ই করবেন না; বরং আপনার গুনাহ গুলোকে সওয়াবে পরিবর্তিত করে দেবেন।

সুবহানাল্লাহ! আছে কি এমন দয়ালু কেউ? আছে কি এমন ক্ষমাশীল কেউ?

তাই এখন সবাই আল্লাহর ইবাদতে পরিপূর্ণ মনোযোগ দিন। আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে তওবা করুন। সবসময় ইস্তেগফার করতে থাকুন। কেউ আপনাকে কোন কষ্ট দিয়ে থাকলে বা ক্ষতি করলে তাকে ক্ষমা করে দিন। আর আপনি ও কাউকে কষ্ট দিলে, ক্ষতি করলে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিন।

আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা যেন আমাদের সবাইকে ছোট-বড়, জানা-অজানা, ইচ্ছাকৃত-অনিচ্ছাকৃত সব ধরনের গুনাহ থেকে ক্ষমা করে দেন।

আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদেরকে এই বিপদ থেকে রক্ষা করুন। আমাদের নেক হায়াত দান করুন। আমরা যেন উনাকে সন্তুষ্ট করে মৃত্যুবরণ করতে পারি আমাদের সেই তাওফিক দান করুন।

[#Share_In_Sha_Allah](https://www.facebook.com/hashtag/share_in_sha_allah?epa=HASHTAG)



[#TURN_to_ALLAH](https://www.facebook.com/hashtag/turn_to_allah?epa=HASHTAG)
আরও নতুন পোষ্ট পরবর্তী পোষ্ট

Related Posts

Facebook