333

মানুষ কেনো প্রেমে পড়ে? - প্রেমরোগ।

মানুষ কেনো প্রেমে পড়ে? - প্রেমরোগ।"
____________________________
প্রেমের নামে নানা নোংরামি বেড়েই চলছে সমাজে এবং  বর্তমানে সেটাই যেন প্রকৃত মানবতা-সভ্যতা ও মানব- স্বাধীনতার  সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। যেখানে ইসলামী আইন নেই সেখানে দিনের দিন এর প্রভাব তো বাড়বেই। কিন্তু আমরা যারা প্রেমের নামে অশান্তি চাইনা, ভালোবাসার নামে নোংরামিকে এবং স্বাধীনতার নামে বেহায়াপনাকে প্রশ্রয় দেই না তাদেরকে এ বিষয়ে ভাবতে হবে যাতে আমাদের পরিবার ও পরিবেশে সেই জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত না হয়। এজন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে, এখন আমরা অবৈধ প্রেম ভালোবাসা কেন সৃষ্টি হয় এর কারণ গুলি নিয়ে আলোচনা করব।
এ সম্পর্কে জানলে হয়তো আমরা আগ থেকেই এ পাপ থেকে নিজেদের ও পরিবারকে রক্ষা করতে পারব।

⏺️কারণ নম্বর ১: দ্বীনদারিতে দুর্বলতা-।

পরিবারের কোন সদস্যের মনে অবৈধ প্রেম সৃষ্টির একটি প্রধান কারণ হল দ্বীনদাররির দূর্বলতা, অবৈধ প্রেমিক এর ভিতর দ্বীনদারী থাকেনা অথবা তার পরিবারের লোকেরা দ্বীনদার নয়, অর্থাৎ সেই পরিবারের লোকেরা প্র্যাকটিসিং মুসলিম নয়, নাহলে যে পরিবেশে দ্বীন ও ঈমানের আলো থাকে, সে পরিবেশে পাপাচারের অন্ধকার আসতে পারে না। যে পরিবারের লোকেরা দ্বীন সম্পর্কে জেনে হালাল-হারাম বুঝেছে, তারা কোনদিন অবৈধ ও নোংরা কোন কর্মকান্ডে জড়িয়ে যেতে পারে না। দ্বিনের অনুসরণ ও আল্লাহর স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে অবশ্যই শয়তানি চক্রান্তে  ও অশ্লীল কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যাবে।
আল্লাহ তা'আলা বলেছেন,  তাঁদের জন্যেই যারা ভয় করে।

وَمَن يَعْشُ عَن ذِكْرِ الرَّحْمَٰنِ نُقَيِّضْ لَهُ شَيْطَانًا فَهُوَ لَهُ قَرِينٌ

যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার সঙ্গী। [আয-যুখরুফ - আয়াত৩৬]

আর সেই শয়তান তো মানুষকে অশ্লীলতা ও মন্দ কাজের নির্দেশ দেয়। [সূরা নূরঃ ২১]

আপনি বলতে পারেন, মসজিদের ইমামরা মসজিদের ভেতরে প্রেম করছে কত পর্দানশীন মেয়েও বোরকার ভিতরে প্রেম করছে কত আলেম ও হাজীদের ঘরের ছেলে-মেয়েরা প্রেমের বাঁশি বাজাচ্ছে, আপনি যাদের কথা ভাবছেন তারা দ্বীনের প্রতীক ঠিকই, কিন্তু আসলে এরা প্রকৃত দ্বীনদার নয়। সেউ সালাত পড়লে বা পেশায় ইমামতি করলেই তাকে দ্বীনদার মনে করার কারণ নেই
কেউ বোরকা পড়লেই তাকে পর্দাবিবি ধারণা করা সঠিক নয়, ওইযে বলা হয় না? ওরা মুসলিম কিন্তু প্রাক্টিসিং মুসলিম নয়। দুঃখের বিষয় বাংলাদেশে ৮৫% ঘরে ইসলামিক চর্চা হয় না।

⏺কারণ নম্বর ২: সুন্দর লাগা-।

নিশ্চয়ই ভালো লাগা থেকে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়, আর ভালোকে কে না ভালোবাসে? সুন্দরকে কে না পছন্দ করে? এ ভালো লাগা সৃষ্টি হয় দুটির মাধ্যমে: দেখা ও শোনার মাধ্যমে, দুটির মধ্যে যেকোনো একটির কিছু বিষয় সুন্দর লাগলে তার প্রতি মনের আকর্ষণ সৃষ্টি হয়।
এমনকি প্রকৃত সুন্দর না হলেও মনের তীব্র আকাঙ্ক্ষায় থাকে সুন্দর লাগে, তারপর কোনো বাধা না থাকলে সে তখন প্রেমের পাত্র বা পাত্রীরুপে পরিগণিত হয়, তার প্রতি বাসনা জাগে তাকে বারবার দেখতে ইচ্ছে হয় যদিও সে কিন্তু সুন্দরী নয়। প্রচন্ড ক্ষুধার সময় সর্বপ্রথম যে খাবার খাওয়া হয় তা বেশ ভালোই লাগে তীব্র পিপাশার প্রথম পানে যে পানি পান করা হয় সেটাই সুপেয় মিষ্টি পানি লাগে এটাই স্বাভাবিক। তখন কেউ তার প্রেমিকাকে অসুন্দর বললে উত্তরে প্রেমিক বলবে, আমার চোখ দুটি নিয়ে দেখো ওকে বিশ্বেসুন্দরী লাগবে! এটাই প্রেমের প্রকৃতি। এমন প্রেমিক-প্রেমিকার তখন এমন অবস্থা হয় যে, তাদের চোখ থাকতেও অন্ধ হয়ে যায়। যেহেতু প্রেম জ্ঞানের চক্ষুকে বন্ধ করে দেয়।
আল্লাহ তা'আলা বলেন, প্রকৃতপক্ষেঃ চক্ষু তো অন্ধ নয়, বরং অন্ধ হয়ে যায় সে অন্তর যা মনের ভেতর লুকিয়ে থাকে [সূরা হাজ্জ-৪৬]

⏺কারণ নম্বর ৩: মুগ্ধ হওয়া-।

মনে মনে মিল তো লেগে গেল খিল, কোন চরিত্রে মুগ্ধ হলে মানুষ মানুষকে ভালোবাসে। পছন্দের ব্যাপারে দুটি মন এক হয়ে গেলে ভালোবাসা সৃষ্টি হয় গুণমুগ্ধ মনে।
দুটি পাখির একটি নীড় একটি নদীর দুটি তীর দুটি মনের একটি আশা তার নাম ভালোবাসা।
সবাইকে দেখলেই সবার ভালোবাসা হয় না, দেখার সাথে অতিরিক্ত কোন গুন লাগে কেউ তার ব্যবহারে মুগ্ধ করলো আর হয়ে গেলো সে তার মনের মানুষ। অমায়িক ব্যবহার মুগ্ধ হয়ে মন দিয়ে বসলো গুনগ্রাহী প্রেমিক।
ছেলেটি মাদ্রাসার জানালায় বসে গজল গাইছিল, পাশের রাস্তা দিয়ে মেয়েটি পার হয়ে যাচ্ছিল গজলের সুর তাঁকে মুগ্ধ করলে ছেলেটিকে সে মন দিয়ে ফেলল, এখনো তারে চোখে দেখিনি শুধু বাঁশি শুনেছি, মন প্রাণ যা ছিল দিয়ে ফেলেছি। অনেকে তো এমন আছে, শিল্পী, খেলোয়াড় কবি, সাহিত্যিক, নায়ক-নায়িকা এদেরকেও ভালোবেসে ফেলে। কেউ তাদের গুণমুগ্ধ ও ভক্ত হতেই পারে কিন্তু অনেকে জীবনসঙ্গী-রুপে পাওয়ার মতো করে ভালোবেসে ফেলে, অথচ সে ভালবাসার খবর তাদের কাছ পৌঁছে না, চেষ্টা করেও পৌঁছাতে পারে না, তা সত্বেও অজানা ভাবে তাকে ভালোবাসে, সে জানে সে তাকে কখনোই পাবে না পাওয়ার কোন সম্ভাবনাও নেই, তবু সে তাকে ভালোবাসে। এমনকি সে বিয়েও করে না -আজব প্রেম।

⏺কারণ নম্বর ৪: উপকার লাভ-।

কেউ কোন উপকার বা অনুগ্রহ করলে মানুষ তার প্রতি দুর্বল হয়ে যায়, প্রতিদানই প্রতিদান চায়, এই রীতির ভিত্তিতে প্রতিদান দিতে পারলেও কেমন যেন মনটা দাতার দাসে পরিণত হয়ে যায়, সুতরাং প্রেমের পিপাশা থাকলে সেটা ভালবাসায় পরিণত হতে দেরি লাগে না। আমিতো কত বন্ধুকে দেখেছি যারা নিজের এসাইমেন্ট করুক আর না করুক বিপরীত লিঙ্গের মানুষের জন্য ঠিক এসাইমেন্ট করে দিত, যদি উপকার করে ভালোবাসা পাওয়া যায়!

⏺কারণ নম্বর ৫: অবৈধ দৃষ্টিপাত-।

প্রেমের সূত্রপাত হয় চোখের দৃষ্টি থেকে, চোখের চাহনি হৃদয়ের মধ্যে এমন আঘাত সৃষ্টি করে, যেমন তীর করে শিকারের এর মধ্যে, তাঁতে যদি শিকার হতো না হয় তাহলে ক্ষত ও আহত অবশ্যই হয়। দুষ্ট দৃষ্টি হলো আগুনের মত, তা যদি কোন শুষ্ক খেড়ের পালায় পড়ে, তাহলে তার ফলে সমস্ত খেড় না পড়লেও কিছুটা পুড়ে অবশ্যই নষ্ট হয়ে যায়।
কবি বলেছেন, প্রথমে দৃষ্টি, তারপর মুচকি হাসি, তারপর সালাম, তারপর বাক্যালাপ, তারপর ওয়াদা, তারপর মিলন (অর্থাৎ ব্যভিচার)। প্রেম জগতে চোখ দিয়ে অনেক কিছুই বুঝানো যায়, যা জিহবা দিয়ে প্রকাশ করতে মানুষ অক্ষম। চোখের কোণেই আছে জাদুর রেখা, দৃষ্টিতে ব্যভিচার হয়, সুতরাং এ দৃষ্টি বড় বিপদজনক। যার জন্যই
আল্লাহ তা'আলা বলেন, মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে (নজর ঝুঁকিয়ে চলে) এবং তাদের যৌনাঙ্গকে সাবধানে সংযত রাখে, এটিই তাদের জন্য উত্তম, ওরা যা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে অবহিত।
আর মুমিন নারীদেরকে বল, তারাও যেন নিজেদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে ও লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। এটিই তাদের জন্য উত্তম ওরা যা করে নিশ্চয়ই  আল্লাহ  সে বিষয়ে অবহিত [সূরা নূর,৩০-৩১]

শরীয়তের এ বিধান অমান্য করার ফলেই সমাজের আজ এই অবস্থা, সুতরাং ছোট আগুনকে অর্থাৎ চোখকে যে নিয়ন্ত্রণ না করবে তার ঘরে আগুন তো লাগবেই।

⏺কারণ নম্বর ৬: হাসির ঝিলিক-।

সাক্ষাতে মুচকি হাসি একটি সম্মোহনী সূচরিত্র, যাদের মাঝে দেখা সাক্ষাৎ ও হাসি বিনিময় বৈধ আছে, তাদের মাঝে মুচকি হাসি ঝিলিক মনকে হৃদয়ের কারাগারে বন্দি করে ফেলে। মুচকি হাসি দেওয়া সুন্নত, কিন্তু অবৈধ প্রেম জগতে একটা কথা আছে, মুচকি হাসি বিদ্যুৎ অপেক্ষায় কম কিন্তু চমকে অনেক বেশি, দুশ্চরিত্র লোকেরা হাসির মাঝে ফাঁসি দিয়ে অবৈধ প্রণয় সৃষ্টি করে।

⏺কারণ নম্বর ৭: মিষ্টি কথা-।

যার চরিত্র সুন্দর, তার কথাও সুন্দর, আল্লাহ তা'আলা মেয়েদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করো তবে পরপুরুষের সাথে কোমল কন্ঠে এমনভাবে কথা বলোনা যাতে অন্তরে যার ব্যাধি আছে সে তোমার ব্যাপারে আকৃষ্ট হয়, তবে তোমরা সর্বদাই নিময়মাফিক কথাবার্তা বলবে, [সূরা অসযাব:৩২]।

কিন্তু যেসব ছেলে মেয়েরা সুন্দর কথা প্রয়োগ করে অবৈধ ভালোবাসা সৃষ্টি করে, তারা নিশ্চয় চরিত্রবান নয় ।

⏺কারণ নম্বর ৮: উপহার দেওয়া-।

উপহার দেওয়া ভালো কাজ , তবে আধুনিক যুগে উপহার আদান-প্রদানের মাধ্যমেও অবৈধ প্রেমের সৃষ্টি হয়,

⏺কারণ নম্বর ৯: প্রশংসা-।

অনেক অসচেতন পিতা-মাতা আছে, যারা অনেক যুবকের কাছে নিজের মেয়ের প্রশংসা করে থাকে, অনেক যুবতী নিজ পিতা মাতার কাছে কোন যুবকের প্রশংসা শোনে আর সেখানেই সেই প্রশংসা বাণী থেকেই তাদের মনে প্রেমের দানা বাঁধতে শুরু করে। অনেক বন্ধু আছে নিজের বোনের কাছে অন্য বন্ধুর প্রশংসা করে, অনেক বোন তার নিজ ভাইয়ের কাছে বান্ধবীর প্রশংসনীয় ও আকর্ষণীয় গল্প শুনিয়ে থাকে। অনেক হতভাগা স্ত্রী আছে যারা নিজ স্বামীর কাছে পরস্ত্রীর রুপ ও গুণচর্চা করে থাকে, এবং তার ফলে তাদের মনের সংগোপনে এক প্রকার প্রবাহ সৃষ্টি করে থাকে , যা পরবর্তী প্রেম রূপে আত্মপ্রকাশ করে,  এ জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন, কোন মহিলা যেন অন্য কোন মহিলার নগ্ন কোলাকুলি না করে কারন সে পড়ে তার স্বামীর কাছে তা এমনভাবে বর্ণনা করবে যে যেন সে তার শুনে ওই মহিলাকে প্রত্যক্ষভাবে দেখছে [বুখারী-৫২৪০]
আর  সরাসরি একে অন্যের প্রশংসা মানেই জবাই, যেহেতু মুখোমুখি প্রশংসায় সৃষ্টি করে অহংকার, সৃষ্টি করে যুবক-যুবতীর মনে অজানা প্রেম প্রবাহ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুখোমুখি প্রশংসা করা ও নেওয়া হতে দূরে থাকো কারণ তা জবাই,[ইবনে মাজাহ:৩৭৪৩] যদি কোন যুবতী কোন যুবকের মুখে নিজ প্রশংসা শোনে, তাহলে কি তা প্রেম না হয়ে অন্য কিছু হয়?, তুমি খুব সুন্দরী, তুমি যেন ডানাকাটা পরী, তুমি যেন পূর্ণিমার চাঁদ, এই কথা শুনে গর্বিতা হয়ে মন সঁপে দিতে দেরি লাগে? কবি বলেছেন, ওকে ওরা সুন্দরী বলে ধোঁকায় ফেলেছে, আর প্রশংসা সুন্দরীদেরকে ধোকায় ফেলে, প্রশংসায় মন কার  না গলে? প্রশংসার ফাঁদে কার মন না শিকার ফাঁসার মতো ফাঁসে?
অতি চালাক অথবা আল্লাহ-ভীরু না হলে অতি সহজেই পা পিছলে যায় এই প্রশংসার তলে।

⏺কারণ নম্বর ১০‌ :‌ সালাম-।

সালাম দেওয়া সুন্নত, কিন্তু শয়তান এখানেও উৎপেতে বসে থাকে, ভালোবাসার এই ছিদ্রপথ দিয়ে অবৈধ ভালোবাসা সৃষ্টি হয়ে থাকে, কোন যুবক কোন যুবতীকে অথবা কোন যুবতী কোন যুবককে সরাসরি সালাম দিলে অথবা কারো মাধ্যমে সালাম দিয়ে পাঠালে তাতে একপ্রকার আকর্ষণ সৃষ্টি হয় তাদের মনের গহীন কোণে, যে আকর্ষণ সময়ের স্রোতে অবৈধ প্রেম রূপে আত্মপ্রকাশ করে থাকে।  এইজন্য উলামাগণ এ মর্মে মানুষকে সতর্ক করে বলেন, ফেতনার ভয় থাকলে বেগানা নারী-পুরুষের মাঝে সালাম বিনিময় বৈধ নয়। আর মুসাফা তো  নয়ই। ফিতনাই নাই হল অবৈধ প্রেম - ভালোবাসা।

⏺কারণ নম্বর ১১: ভালোবাসার গান ও কবিতা-।

দুঃখে যে পড়েনি সে সুখের সন্ধান দিতে পারেনা,
প্রেমে যে পড়েনি সে প্রেমের কবিতা লিখতে পারেনা, এটি একটি বাস্তব কথা। নিশ্চয়ই প্রেমিক-প্রেমিকা প্রেমের কবিতা ও গান শুনতে ভালোবাসে। আর  অপ্রেমিক হলে প্রেমের গান ও কবিতা তাকে প্রেমিক বানিয়ে ছাড়বে। বর্তমান যুগের গানগুলো এই রকমভাবে ই তৈরা করা হয়, যে জীবনে প্রেম করেনি সেও গান শুনে প্রেম করার জন্য ব্যাকুল হয়ে যায়। আসলে ভালোবাসার গান শয়তানের মন্ত্র, যার দ্বারা সে প্রেম-পাগলদেরকে সম্মোহিত করে। গান শয়তানের একটি ফাঁদ, বর্তমান যুগের গান সুপ্ত  যৌন- বাসনাকে জাগরিত করে। উত্তেজনা বৃদ্ধি করে, লজ্জা বিলীন করে এবং আত্মমর্যাদা ধ্বংস করে , আর তার ফলেই সংঘটিত হয় ব্যভিচার। আর গান এখানে মদের কাজ করে, মদ যেমন মাতালকে নেশায় মত্ত করে বহু অঘটন ঘটায়, যৌন উন্মাদনামূলক গানও তা ঘটাতে পারে। সুতরাং মনে প্রেম সৃষ্টিকারী জাদু হলো গান।

⏺কারণ নম্বর ১২: প্রচার মাধ্যম-।

প্রচার মাধ্যম বর্তমান যুগে অনেক, কিছুর মাধ্যমে শোনা যায়, কিছুর মাধ্যমে শোনো দেখা যায়, কিছুর মাধ্যমে দেখা ও পড়া যায়, টিভি-চ্যানেল গুলোর দিকে তাকালেই দেখা যায় কিভাবে প্রেম প্রচার-প্রসার হচ্ছে। ইউটিউব ঘুরলে দেখতে পাবেন কত রোমান্টিক নাটক, ফেসবুক ঘুরলে দেখতে পাবেন ছোট ছোট রোমান্টিক ভিডিও,
আর মুভির কথা, রোমান্টিক বইয়ের কথা তো বাদই দিলাম। এই সকল টিভি চ্যানেল ইউটিউব চ্যানেল এর উদ্দেশ্য হল- দ্বীন ধর্ম নিপাত যাক  নাস্তিকতা বৃদ্ধি পাক, নারী-স্বাধীনতা অর্থাৎ জড়ায়ু-স্বাধীনতার জয়জয়কার! সচ্চরিত্রতা ধ্বংস হোক, অশ্লীলতার তুফান আসুক, সামাজিক বা ধর্মীয় বাধা লংঘন করে যেভাবে হোক জীবনটাকে উপভোগ করো। আর এই সকল ভোগ-বিলাসের সামগ্রী অতি সহজলব্ধ করে ভরে দেয়া হয়েছে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে। মানুষ তা দেখছে এগুলার প্রভাব কি পড়বে না? অবশ্যই পড়বে!

প্রিয় মুসলিম যুবক ও যুবতী!
প্রেমের উপন্যাস পড়ে অথবা ফিল্ম দেখে ধারণা করছো?
তুমিও ওই নায়ক বা নায়িকার মত তোমাদের প্রেমে সফল হবে? অমূলক ধারণা, কল্পনা ও বাস্তব এক নয়, স্বপ্ন ও জাগরণ এক নয়, উপন্যাসের লেখক এবং ফিল্মের ডাইরেক্টর কায়দা করে হিরো হিরোইনকে শত বাঁধার মাঝে সফল করে নেয়, কিন্তু তোমাদেরকে সকল করবে কে?

প্রিয় পাঠক লেখাটি বড় করার জন্য দুঃখিত। শেয়ার করতে ভুলবেন না।

collected

আরও নতুন পোষ্ট পরবর্তী পোষ্ট

Related Posts

There is no other posts in this category.

Facebook