হাদিস-সুন্নাহ

অশ্লীলতার প্রসার কিয়ামতের আলামত, অশ্লীলতা’ শব্দের আরবি প্রতিশব্দ হিসেবে পবিত্র কোরআনে ‘ফাহশা’ ও ‘ফাহেশা’

অশ্লীলতার প্রসার কিয়ামতের আলামত

৬ মার্চ, ২০২০
©আবু হোছাইন রহমান

‘অশ্লীলতা’ শব্দের আরবি প্রতিশব্দ হিসেবে পবিত্র কোরআনে ‘ফাহশা’ ও ‘ফাহেশা’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অভিধান মতে, অশ্লীলতা মানে কুৎসিত, জঘন্য, অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও কদর্য রুচি। সাধারণভাবে বলা যায়, লজ্জাহীনতা, রুচিহীনতা, অসুন্দর, অশোভন—এসবের সামষ্টিক রূপই হলো অশ্লীলতা।

অশ্লীল কাজ সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া অপরাধ। কারো গোপনীয় চরিত্র বা স্থিরচিত্র প্রকাশ করাও জঘন্যতম অশ্লীল কাজ। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমানদারদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার পছন্দ করে, তাদের জন্য ইহকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ১৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন যে কিয়ামতের পূর্বক্ষণে নগ্নতা ও অশ্লীলতার ব্যাপক প্রচার ঘটবে। হাদিস শরিফে এসেছে, নিশ্চয়ই এসব কিয়ামতের আলামত যে একসময় কৃপণতা ও অশ্লীলতা প্রকাশ পাবে। খিয়ানতকারীকে আমানতদার মনে করা হবে। আমানতদারকে খিয়ানতকারী মনে করা হবে। নারীদের নতুন নতুন পোশাকের উদ্ভব ঘটবে, যেগুলো পরিধান করে নারীরা বস্ত্রাবৃত হয়েও নগ্ন থাকবে। নিকৃষ্ট লোকেরা অভিজাত লোকদের ওপর প্রভাব বিস্তার করবে। (তাবরানি আওসাত, হাদিস : ৭৪৮৯)

অন্য হাদিসে এসেছে, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, জাহান্নামিদের মধ্যে দুটি দলকে আমি দেখিনি। (কিয়ামতের আগে তাদের আবির্ভাব ঘটবে) এক দলের কাছে গরুর লেজের মতো চাবুক থাকবে, সেগুলো দিয়ে তারা মানুষকে প্রহার করতে থাকবে। আরেক দল হলো, এমন সব নারী, যারা কাপড় পরিহিত হবে অথচ তারা প্রকৃত অর্থে নগ্ন থাকবে। তারা পুরুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাইবে, নিজেরাও পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তাদের চুলের খোঁপা উটের চুট ও কুঁজের মতো একদিকে হেলে থাকবে। তারা জান্নাতে যাবে না। জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের ঘ্রাণ বহুদূর থেকে পাওয়া যাবে। (মুসলিম শরিফ : ৪/২১৯২)

এই হাদিসের শব্দদ্বয়ের কয়েকটি ব্যাখ্যা হতে পারে—
এক.  এর অর্থ সেসব নারী আল্লাহর নিয়ামতপ্রাপ্তা হবে, কিন্তু তারা আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ থেকে বিরত থাকবে।

দুই.  তারা কাপড় পরিহিতা হবে, কিন্তু নেক আমল, পরকালের ফিকর ও আল্লাহর আনুগত্য থেকে নিজেদের দূরে রাখবে।

তিন.  সেসব নারী কাপড় পরিধান করেও সৌন্দর্য প্রকাশের জন্য শরীরের কিছু অংশ খোলা রাখবে। ফলে তারা বস্ত্রাবৃত হয়েও নগ্ন থাকবে।

চার.  তারা বাহ্যিক সৌন্দর্য ও অলংকারে মোড়ানো থাকবে, কিন্তু তাকওয়ার পোশাক বা মানসিকতায় নগ্ন থাকবে।

পাঁচ.  তারা এতই পাতলা কাপড় পরিধান করবে যে দেহের অভ্যন্তরীণ অংশ দেখা যাবে। ফলে কাপড় পরিহিতা হয়েও তারা নগ্ন থাকবে। (শরহে নববী : ১৭/১৯০-১৯১; মেরকাত : ৬/২৩০২)

     মহান আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। আমিন।



আরও নতুন পোষ্ট পরবর্তী পোষ্ট

Related Posts

Facebook