হাদিস

একজন ভালো মানুষ যে একটি বা দুইটি ভুল করে সে তার মত নয় যে নিয়মিত পাপ করে এবং একই অন্যায় বার বার করতে থাকে।

একজন ভালো মানুষ যে একটি বা দুইটি ভুল করে সে তার মত নয় যে নিয়মিত পাপ করে এবং একই অন্যায় বার বার করতে থাকে। সুনানে আবু দাউদের একটি হাদিসে আমাদের রাসূল (স) বলেন - أقيلوا ذوي الهيئات عثراتهم إلا الحدود - যার ভাবগত অনুবাদ হলো - সম্মানিত মানুষরা যদি কোনো ত্রুটি করে বসে তাহলে তাদের কিছুটা ছাড় দাও....।
তোমাদের সমাজের সম্মানজনক মানুষরা যদি কোনো ভুল করে বসে, তাহলে তাদের কিছুটা ছাড় দাও। আমরা মানুষের সামগ্রিক কাজ দেখে তাকে বোঝার চেষ্টা করি। শুধু একটা দুইটা ত্রুটি দেখেই তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেই না।
আমাদের সময়ের অন্যতম একটি সমস্যা হলো, আমরা কারো ভালো কাজের ব্যাপারে অন্ধ থাকি, কিন্তু যখনই সে কোনো ত্রুটি করে বসে ব্যাস, সারা দুনিয়া একত্রিত হয়ে তাকে নিন্দা জানাতে থাকে। এমন আচরণ আলেম ওলামাদের বেলায় বেশি ঘটে। তালেবে ইলম, আলেম বা দায়ীরা ইসলামের কাজ করতে গেলে কোনো না কোনো ভুল করে ফেলবেন, এটা স্বাভাবিক। মোটের উপর, তারা প্রায় প্রতিদিন কোথাও না কোথাও বক্তৃতা দিয়ে থাকেন। ওলামা, মাশায়েখরা কী করেন? তারা শুধু বক্তৃতার পর বক্তৃতা দিয়ে যান।
আর বর্তমানে তো তাদের কথা হুবহু রেকর্ড হয়ে যায়। তাই, কেউ যখন হাজার হাজার বা শত শত ঘন্টা বক্তৃতা দিয়ে থাকেন, তার কোনো কোনো কথায় ছোট ধরণের ভুল তো হবেই এমনকি হয়তো বড় ধরণের ভুলও হয়ে যেতে পারে। এর কোনো কোনোটায় তিনি হয়তো আসলেই ভুল করেছেন। অর্থ্যাৎ, তিনি তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন। কারণ তিনিও তো মানুষ।
এখন কেউ যদি এভাবে তার ত্রুটিগুলো খুঁজে খুঁজে বের করে আর সবাইকে জানাতে থাকে - "দেখ দেখ, তোমাদের হুজুর অমুক অমুক জায়গায় ভুল করেছেন।" এর দ্বারা আসলে একমাত্র যা প্রমাণিত হয় তা হল, ঐ লোকের অন্তরে অসুখ রয়েছে। অন্যের ভুল ধরার আগে তার উচিত নিজের অন্তরের অসুখ দূর করা।
আপনি তার সামগ্রিক দিকটি বিবেচনায় আনছেন না। এই শায়েখের তো শত শত ঘন্টার লেকচার আছে। আর আপনি তার দুই, তিন মিনিটের ভুল খুঁজে বের করেছেন! এমনকি তিনি যদি ঐ তিন মিনিটের কথায় ভুল করেও থাকেন, তার ভালো কাজগুলোর দিকে তাকান। এমন দৃষ্টান্তই আমরা দেখতে পাই হজরত হাতিব ইবনে আবি বালতা'য়ার ঘটনায়। তিনি মক্কা আক্রমণের খবর কুরাইশদের জানিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ধরা পড়ে যান। তবু, রাসূলুল্লাহ (স) তাঁর সামগ্রিক ভালো কাজের দিকে তাকিয়ে তাকে ক্ষমা করে দেন।


-- শায়েখ ইয়াসির ক্বাদীর আলোচনা থেকে অনুপ্রাণিত। [Seerah of Prophet Muhammad (s) 77]
আরও নতুন পোষ্ট পরবর্তী পোষ্ট

Related Posts

Facebook